আজ ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশের রেশনের চাল-গম কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ

 

ডেস্ক.
পুলিশের রেশনের চাল-গম বাজারে কেনাবেচার নিয়ম না থাকলেও কিশোরগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পুলিশের রেশন কেনাবাচা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসের শেখ রেশনের চাল-গম কেনাবেচার কোনো সুযোগ নেই দাবি করে বলেছেন, অভিযাগটি তদারকি করে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খাদ্য গুদাম থেকে একটি ট্রাক আট মেট্রিক টন গম নিয়ে শহরের নগুয়া-বটতলা এলাকার ফিরোজ মিয়ার দোকানের সামনে গেলে স্থানীয়দের প্রশ্নের মুখে পড়ে ট্রাক ড্রাইভার। তখন পুলিশ সুপারের নামে বরাদ্দ দেওয়া খাদ্য অধিদপ্তরের একটি বরাদ্দপত্র বা ডিও দেখায় চালক। এরপর পুলিশের রেশনের চাল-গম কেনাবেচার বিষয়টি জানাজানি হয়।

পরে ব্যবসায়ী ফিরােজ মিয়া সাংবাদিকদের জানান, তিনি বড় বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়ার কাছ থেকে এসব গম কিনেছেন। তিনি দাবি করেন, তারা কাগজপত্র দেখেই চালগম কিনে থাকেন। এটি বৈধ ব্যবসা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বড় বাজারের ব্যবসায়ী মাে. জুয়েল। তিনি বলেন, এগুলাে আপনারা এসপি সাহবেকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন। আমি এসপি সাহেবের কাছ থেকে কিনেছি। এসব তাদেরই মালামাল। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি মােট ৫৫ মেট্রিক টন চাল-গম কিনেছেন বলে স্বীকার করেন। এর মধ্যে ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১৮ মেট্রিক টন গম রয়েছে।

ট্রাক ড্রাইভার বলেন, এ গমগুলাে ব্যবসায়ী জুয়েলের। সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে এসব এনেছেন তিনি। আমি আমার ট্রাকে করে এখানে আরেক ব্যবসায়ীর কাছে নিয়ে এসেছি। বৃহস্পতিবার রাতে আরাে ১০টন গম বিসিকের একটি কারখানায় ট্রাক আমার ট্রাক দিয়ে নামিয়ে দিয়ে এসেছি।

জানা গেছে, পুলিশ প্রতিমাস চাল,গম, চিনি, ডাল, তেলসহ যেসব পণ্য পেয়ে থাকে, সেগুলাে তাদের ভর্তুকিমূল্য দেওয়া হয়। রেশনের এসব পণ্য বাজারে বিক্রি করা অবৈধ। এসব পণ্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য সরাসরি গ্রহণ করে থাকেন।
স্থানীয়রা বলছেন, রেশনের চাল-গম বিক্রি যােগ্য না হলে, এগুলাে ব্যবসায়ীদের হাতে গেল কীভাবে। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

এ ব্যাপারে কিশােরগঞ্জ পুলিশ সুপার মােহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, পুলিশের রেশনের চাল-গম কেনাবেচার কােনাে সুযােগ নেই। এটি পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হতে পারে। তাছাড়া পুলিশ সুপারের নামে বরাদ্দপত্রের কাগজটিও সঠিক কি-না তা-ও যাচাইসহ পুরাে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি এ সময় আরাে বলেন, জেলায় দুই হাজার ৪৪৯জন পুলিশের নামে প্রতিমাসে রেশন আসে। এগুলাে বিতরণসহ সব কার্যক্রম অনলাইনে হয়ে থাকে। কােনাে পুলিশ সদস্য রেশন না পাওয়ার অভিযাগ করেনি। অভিযােগ পেয়ে আমি নিজে পুলিশ লাইনন্সে গিয়ে রেশনের মজুদসহ সবকিছু পরীক্ষা করে এসেছি। তবে এখানে অন্যকিছু রয়েছে কি-না কােনাে সিন্ডিকেট কাজ করছে কি-না সবই খুঁজে বের করব আমরা। পুলিশর কেউ এসবে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ